কলকাতা: ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলা। এই আবহে বুধবার ইমাম-মোয়াজ্জিমদের সঙ্গে সম্মেলন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সম্মেলন থেকে রাজ্যের সংখ্যালঘুদের শান্ত থাকার বার্তা দিলেন তিনি। বাংলায় ওয়াকফ হবে না আশ্বাস দিয়ে এই আন্দোলন দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদে হিংসায় আক্রান্তদের জন্য ক্ষতিপূরণেরও ঘোষণা করলেন।
মুর্শিদাবাদে হিংসায় মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ সরকার দেবে বলে এদিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে যাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে তাঁদের বাংলার আবাস প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। এদিন নেতাজি ইন্ডোর থেকে মমতা বলেন, “আমি কোনও সম্প্রদায় হিসাবে দেখি না, মানুষ হিসাবে দেখি। যারা মারা গিয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে আমাদের সরকার ১০ লক্ষ টাকা করে দিয়ে সাহায্য করবে। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে তাঁদের সবাইকে বাংলার বাড়ি করে দেওয়া হবে। যাঁদের দোকান নষ্ট হয়েছে তার হিসাব-নিকেশ করে মুখ্যসচিব দায়িত্ব নিয়ে কাজটা করবেন।”
এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিমদের সম্মেলনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে নেতাজি ইন্ডোরে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের হাতজোড় করে বলছি, কেউ অশান্তি করতে চাইলে আপনারা নিয়ন্ত্রণ করুন। অশান্তি করতে দেবেন না। ধর্মীয় জায়গা থেকে আপনারা শান্তির আবেদন জানান। এটা আমার ব্যক্তিগত আবেদন।’’
তড়িঘড়ি ওয়াকফ সংশোধনী আইন তৈরি করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘এত তাড়াহুড়োর কী ছিল!’’ সংশোধিত ওয়াকফ আইন যে বাংলায় কার্যকর হবে না, তা আরও এক বার জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের অবস্থান আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়ে মমতা উপস্থিত ইমাম-মোয়াজ্জিমদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘বাংলায় আন্দোলন করলে হবে না। আন্দোলন করতে হলে দিল্লিতে যান। ট্রেনে যান। প্লেনে যান। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চান। রাস্তায় থাকুন। ময়দানে থাকুন।’’ দিল্লিতে সেই আন্দোলনে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে তৃণমূলের সাংসদেরাও থাকবেন বলে জানিয়েছেন মমতা।